রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

কাজটা শেষ করো, ওরা মরতে চায়‍‍`—কেন বললেন ট্রাম্প?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৬, ২০২৫, ১১:৩৫ এএম

কাজটা শেষ করো, ওরা মরতে চায়‍‍`—কেন বললেন ট্রাম্প?

ছবি- সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান দীর্ঘ ২১ মাস ধরে চলছে। এই সময়ে মানবিক বিপর্যয় তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করছিল। ঠিক এই সময়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক আকস্মিক ও বিতর্কিত মন্তব্যে ইসরায়েলকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান, যা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।




 সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রতি গাজায় সামরিক অভিযান 'শেষ করে ফেলার' আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) স্কটল্যান্ডে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, হামাস 'সৎভাবে আলোচনায় বসতে চায় না' এবং 'তারা আসলে মরতে চায়'। ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আলোচনা থমকে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে দেশটি নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, "আমার মনে হয়, ওরা (হামাস) মরতে চায়, আর সেটা খুবই, খুবই দুঃখজনক। কাজটা শেষ করতেই হবে।" তার এই বক্তব্য গাজায় চলমান মানবিক সংকটের তীব্রতার মধ্যেই এসেছে, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তারা গাজার পরিস্থিতিকে 'জীবন্ত লাশে ভরা অঞ্চল' হিসেবে বর্ণনা করছেন এবং দুর্ভিক্ষের কঠোর সতর্কবার্তা দিচ্ছেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের একটি নাটকীয় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ কয়েক সপ্তাহ আগেও তিনি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি 'অত্যন্ত কাছাকাছি' বলে মন্তব্য করেছিলেন।

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ কাতারের দোহায় চলমান আলোচনা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, হামাসের মধ্যে 'আন্তরিকতা ও সমন্বয়ের ঘাটতি' রয়েছে। এরপরই ট্রাম্পের এমন কঠোর মন্তব্য সামনে এলো।

যুক্তরাষ্ট্রের এই আকস্মিক অবস্থান পরিবর্তনে কাতার ও মিসরের কূটনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে, যারা গাজা যুদ্ধবিরতির প্রধান মধ্যস্থতাকারী। দোহায় আলোচনার সঙ্গে জড়িত এক সূত্র এই পরিস্থিতিকে 'ভূমিকম্পের' সঙ্গে তুলনা করেছেন।

তবে মিসর ও কাতারের কর্মকর্তারা এই অচলাবস্থাকে 'স্বাভাবিক' বলে অভিহিত করে আলোচনার গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি যৌথ বিবৃতিতে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিএনএন-কে বলেছেন, আলোচনা 'একেবারেই ভেঙে পড়েনি' এবং একটি নতুন চুক্তির পথ এখনও খোলা আছে।

ট্রাম্পের এই বক্তব্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি তার বিরক্তিও প্রকাশ পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার সাম্প্রতিক কথোপকথন ছিল 'হতাশাজনক', যদিও তিনি এর বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে নেতানিয়াহু ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন যে, ইসরায়েল 'বিকল্প' কৌশল নিয়ে ভাবছে, যার লক্ষ্য জিম্মিদের মুক্তি ও হামাসের শাসনের অবসান।